সাংবাদিক নির্যাতনসহ ১৪ দফা দাবিতে কলম বিরতির ঘোষণা
সাংবাদিক নির্যাতনসহ ১৪ দফা দাবিতে কলম বিরতির ঘোষণা

দেশে অব্যাহত সাংবাদিক নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানি বন্ধসহ ১৪ দফা দাবিতে আগামী ২০ মে দিনব্যাপী প্রতীকী কলম বিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ মে) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সমাবেশে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর এ ঘোষণা দেন।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, পেশাদার সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করে আইডি নাম্বার প্রদান, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন।
আহমেদ আবু জাফর পেশার দাবি, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় কলম বিরতি পালনের জন্য সারা দেশের সাংবাদিক সহযোদ্ধা বন্ধুদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
এ সময় সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ফোরামের সহ সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন, সহ সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাবেক সহ সভাপতি মনজুর হোসেন ঈসা, সহ সম্পাদক নুরুল হুদা বাবু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাতেন বাচ্চু, জি কে রাসেল, পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ মাহমুদ, আইটি উপ-কমিটির সদস্য আশরাফুল ইসলাম রোহিত, ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি জাকির হোসেন, ঢাকা জেলার নেত্রী মরিয়াম আক্তার মারিয়া, বরিশাল সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি ওয়াসেফ উদ্দিন আহমেদ, বরগুনা জেলা কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির, সাধারণ সম্পাদক তাপস মাহমুদ, সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাজা, সাকিব জামাল, যশোরের সেলিম রানা, চাঁদপুরের শাহারুখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রুহুল আমিন, শ্রীপুর শাখার সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, ছাতক শাখার সভাপতি মোশাহিদ আলী, পত্নীতলার সাংবাদিক মাহমুদুন্নবী, মানিকগঞ্জের মাসুদ চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন না থাকায় প্রতিনিয়ত টোকাইয়ের দ্বারাও সাংবাদিকরা হামলা মামলার শিকার হচ্ছেন। সাংবাদিকদের তালিকা না থাকায় ভুয়া সাংবাদিক, হলুদ ও অপ-সাংবাদিকতার মত কালো অধ্যায় পেশাটিকে কুরে কুরে খাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা না থাকার ফলে রাজনৈতিক নেতা কিংবা টোকাইদের ফোনেও সাংবাদিকদের চাকরি চলে যায়। এভাবে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভখ্যাত গণমাধ্যম চলতে পারে না।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ঘোষিত ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে সাংবাদিকদের পেটের ক্ষুধা, কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা এবং নিশ্চয়তা রক্ষা পাবে বলে বক্তারা মনে করেন।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের সাথে রাষ্ট্র সব সময় বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। গণমাধ্যম সপ্তাহের নামে সাংবাদিকরা নয় বছর ধরে একটি সপ্তাহ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির চেয়েও পায়নি।
তারা বলেন, দেশে শিক্ষা সপ্তাহ, স্বাস্থ্য সপ্তাহ, কৃষি সপ্তাহ, মৎস্য সপ্তাহ, পুলিশ সপ্তাহ, পুষ্টি সপ্তাহসহ অগণিত দিবস রয়েছে। সে সকল সপ্তাহ এবং দিবস আমাদের দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে উদ্যাপিত হয়। অথচ সাংবাদিকদের একটি মাত্র দিবস ৩ মে বিশ্বের অধিকাংশ দেশে রাষ্ট্রীয় ভাবে উদ্যাপিত হলেও বাংলাদেশে হয় না, এটি গণমাধ্যমের জন্য অমর্যাদার দুঃখজনক এবং এটি কি বিমাতাসুলভ আচরণ নয়?
বক্তারা আরও বলেন, দেশ গঠনের ৫৪ বছর সময়ে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সমাজকে নিজেদের দাবি এবং অধিকার নিশ্চিত করতে মাঠে আন্দোলন করতে হয়; যা চরম দুঃখ, কষ্ট, বেদনা এবং লজ্জার। সাংবাদিকতা এমনই একটি পেশা যারা নিজেদের রুটিরুজি-বেতন-ভাতা নিশ্চিত করতে, সাংবাদিকদের তালিকা প্রণয়ন করতে, সাংবাদিক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের জন্য আজও মাঠে কাঁদছে তারা অথচ কোনও সুরাহা নেই, আমরা এসবের সুরাহা চাই।
সমাবেশে সাংবাদিক নির্যাতন মুক্ত আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।