বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষায় বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর বরাবর স্মারকলিপি প্রদান

বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সংকট, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্রহীন পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যপ্রবাসী বাংলাদেশিদের একটি সংগঠন। শুক্রবার (১ আগস্ট) লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিটে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ‘হৃদয়ে একাত্তর’ নামে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সংগঠনটি।
বিকাল ৪টায় দেওয়া স্মারকলিপিতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বাস্তবতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতার সংকুচিত পরিসর, বিচার বিভাগ ও নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা এবং ক্রমবর্ধমান দমন-পীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয়।
স্মারকলিপিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে সংঘটিত একটি মর্মান্তিক ঘটনার কথা, যেখানে ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’ নামক একটি বিতর্কিত রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সেনাবাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ৪ জন নিহত হন। তবে, স্থানীয়দের ভাষ্যমতে নিহতের সংখ্যা ১০ থেকে ২০ পর্যন্ত হতে পারে। দাবি করা হয়, ওই কর্মসূচির পেছনে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ ধ্বংসের পরিকল্পনা ছিল—যা দেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ওপর সরাসরি আঘাত।
স্মারকলিপিতে আরও অভিযোগ করা হয়, সরকারবিরোধী মতাবলম্বী রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন মামলা দায়ের, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও এক সাবেক প্রধান বিচারপতিকে প্রকাশ্যে হেনস্তা করে গ্রেপ্তার এবং জঙ্গিবাদী গোষ্ঠীগুলোর বাড়তি সক্রিয়তার কারণে দেশে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে। এতে শুধু দেশের ভেতরই নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় অস্থিরতা বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানকারী প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ‘হৃদয়ে একাত্তর’ সংগঠনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা দেওয়ান গৌছ সুলতান। প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন—সৈয়দ বদরুল আহসান, আলিমুজ জামান, ধনঞ্জয় পাল, গোলাম রসুল খান এবং শাহ জান্নাত সুলতানা রুমি হক।
বৃটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রতিনিধি দল বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অন্যতম অভিভাবক হিসেবে যুক্তরাজ্যের উচিত বাংলাদেশে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনশাসন রক্ষায় আরও সক্রিয় ও দৃঢ় অবস্থান নেওয়া।
সংগঠনটি আশা করে, যুক্তরাজ্য সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এবং আন্তর্জাতিক মহলে গণতন্ত্র রক্ষার প্রশ্নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।