ব্রিটিশ পাসপোর্ট নবায়ন ফি বাড়ানোর সুপারিশ

ব্রিটিশ সরকারের ব্যয় তদারককারী সংস্থা ন্যাশনাল অডিট অফিস (এনএও) দেশটির পাসপোর্ট অফিসকে পাসপোর্ট নবায়নের বর্তমান ফি ৯৫ পাউন্ড থেকে বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে প্রতিবছর লাখো ব্রিটিশ নাগরিকের ওপর বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ পড়তে পারে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাসপোর্ট অফিসের বাজেট ঘাটতি ছিল ২২৩ মিলিয়ন পাউন্ড এবং গত পাঁচ বছরে মোট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৯১৬ মিলিয়ন পাউন্ডে। এখন পর্যন্ত এই ঘাটতি সরকার ট্যাক্সদাতাদের অর্থ দিয়ে পূরণ করে আসছে। তবে এনএও বলছে, এর বদলে ফি বাড়িয়ে সরাসরি ব্যবহারকারীদের কাছ থেকেই ব্যয় আদায় করা উচিত।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শুধুমাত্র গত বছরেই ব্রিটেনের প্রায় ৬.৯৭ মিলিয়ন নাগরিক নতুন পাসপোর্ট সংগ্রহ করেছেন। বর্তমানে একটি পূর্ণ মেয়াদি প্রাপ্তবয়স্ক পাসপোর্টের মেয়াদ ১০ বছর এবং শিশুদের ক্ষেত্রে ৫ বছর। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্কদের পাসপোর্ট ফি ৯৪.৫০ পাউন্ড আর একদিনে পাসপোর্ট নবায়নের ক্ষেত্রে ফি দাঁড়ায় ২২২ পাউন্ডে।
এনএও মনে করে, পাসপোর্টের মতো দীর্ঘমেয়াদি সেবার খরচ আগেই পুরোপুরি আদায় করে নেওয়াই সবচেয়ে উপযুক্ত, যাতে ভবিষ্যতে আরও বড় ঘাটতির বোঝা না পড়ে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে অসম চাপ বহন না করতে হয়।
সংস্থাটির মতে, ঘাটতি পূরণে যদি ফি বাড়ানোর প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হতো, তাহলে প্রতি আবেদনকারীকে অতিরিক্ত প্রায় ৩২ পাইন্ড গুনতে হতো। যদিও বাড়ানোর নির্দিষ্ট হার বা সময়সীমা নিয়ে কোনো সুপারিশ দেয়া হয়নি।
তবে হোম অফিস জানিয়েছে, “বর্তমানে পাসপোর্ট ফি বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই।”
গত কয়েক বছরেই ব্রিটেনে পাসপোর্ট ফি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ বছর পর প্রথমবারের মতো ফি বাড়ানো হয় ৯ শতাংশ হারে, ৭৫.৫০ থেকে ৮২.৫০ পাউন্ড করা হয়। এরপর ২০২৪ সালে আরও ৭ শতাংশ এবং চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ৬.৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি করা হয়।
পার্লামেন্টের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান স্যার জিওফ্রে ক্লিফটন-ব্রাউন বলেন, “সঠিক খরচ পুনরুদ্ধারের নীতি মানলে ট্যাক্সদাতাদের ওপর বোঝা কমে। কিন্তু সঠিক হিসাব, পর্যাপ্ত তথ্য না থাকা এবং ফি পরিবর্তনের দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া কার্যকর বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারের বিভিন্ন বিভাগে ফি নির্ধারণে আরও স্বচ্ছতা, সঠিক নির্দেশনা ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।”