আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শেখ হাসিনার বাণী

বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন এবং বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে বাণী দিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুকন্যার এই বাণীতে উঠে এসেছে দলটির ঐতিহাসিক পথচলা, বর্তমান রাজনৈতিক সংকট এবং ভবিষ্যৎ সংগ্রামের আহ্বান।
শেখ হাসিনা বলেন, “১৯৪৯ সালের এই দিনে গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণের প্রত্যয়ে যাত্রা শুরু করে আওয়ামী লীগ। পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ববঙ্গের মানুষের আকাঙ্ক্ষা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হলে, তখনকার তরুণ প্রগতিশীল রাজনীতিকরা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী এবং শামসুল হকের নেতৃত্বে গড়ে তোলেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরবর্তীতে যা হয়ে ওঠে নির্ভীক অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান শক্তি।”
তিনি স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান এবং বলেন, “কারাবন্দী অবস্থায় যিনি দলের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন, তিনিই পরবর্তীতে জাতিকে স্বাধীনতার পথে নেতৃত্ব দেন। আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতার তোষামোদ করে জন্ম নেয়নি, বরং জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামেই গড়া এ দল।”
জাতির পিতার কন্যার আরও বলেন, “বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে আমরা বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের পথে এনেছি—দারিদ্র্য হ্রাস, প্রযুক্তি-উন্নয়ন, জঙ্গিবাদ দমনসহ বহু খাতে ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগ একে অপরের পরিপূরক।”
তবে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আজ আমরা এক গভীর ষড়যন্ত্রের মুখে। একটি অগণতান্ত্রিক সরকার আমাদের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করেছে। হাজারো নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন, লাখ লাখ নেতা-কর্মী মিথ্যা মামলার শিকার হচ্ছেন। এসব দমনপীড়ন শুধু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধেও এক বড় ষড়যন্ত্র।”
এই পরিস্থিতিতে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনার আহ্বান, “সাহস হারাবেন না। অতীতের মতো এবারও বাংলাদেশকে রক্ষা করবে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, সাহস ও বিচক্ষণতাই আমাদের শক্তি।”
তিনি তাঁর বাণীর শেষাংশে উচ্চারণ করেন,“জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু। আঁধার কেটে ভোর হোক, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”