যুক্তরাজ্যে মসজিদে অগ্নিসংযোগ, অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচলেন দুজন

যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ উপকূলীয় শহর পিসহেভেনে একটি মসজিদে ভয়াবহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) রাতে মসজিদের সামনে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় মুখোশধারী দুই ব্যক্তি। ওই সময় মসজিদের ভেতরে দুজন ব্যক্তি থাকলেও অল্পের জন্য তারা প্রাণে রক্ষা পান। স্থানীয় পুলিশ ঘটনাটিকে ‘ঘৃণাজনিত অপরাধ’ হিসেবে তদন্ত করছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, শনিবার রাত ১০টার কিছু আগে দুই মুখোশধারী ব্যক্তি মসজিদের দরজা জোর করে খোলার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে তারা দরজার সামনে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে মসজিদের সামনের অংশ এবং মসজিদ কমিটির চেয়ারম্যানের গাড়িটি পুড়ে যায়। ওই গাড়িটিই ছিল তার একমাত্র জীবিকা—তিনি পেশায় একজন ট্যাক্সিচালক।
ঘটনার সময় মসজিদের ভেতরে উপস্থিত ছিলেন ষাটোর্ধ্ব চেয়ারম্যান ও একজন নামাজরত মুসল্লি। নামাজ শেষে তাঁরা চা পান করছিলেন। হঠাৎ আগুনের শব্দ শুনে বাইরে এসে তাঁরা আগুন দেখতে পান এবং দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যান।
মসজিদটি মাত্র চার বছর আগে নির্মিত হয় এবং স্থানীয় ১০-১৫ জন মুসল্লির নিয়মিত নামাজ আদায়ের স্থান। মসজিদের ব্যবস্থাপক বলেন, "আমরা এমন শান্তিপূর্ণ এলাকায় এমন কিছু কখনো কল্পনাও করিনি। সবাই এখন আতঙ্কে আছে।"
ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা ক্যামেরায় হামলাকারীদের মুখোশ পরে আসা, দরজা খোলার চেষ্টা এবং আগুন লাগানোর পুরো দৃশ্য ধরা পড়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আগুনে কেউ শারীরিকভাবে আহত না হলেও, স্থানীয় মুসলিমদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে মসজিদ এলাকা ঘিরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং আশপাশের উপাসনালয়গুলোতেও টহল বাড়ানো হয়েছে।
লিউইস জেলার এমপি জেমস ম্যাকক্লিয়ারি বলেন, “পিসহেভেনের মসজিদে আগুন লাগার ঘটনাটি ভয়াবহ। এটি আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। পুলিশ যথাযথভাবে এটিকে ঘৃণাজনিত অপরাধ হিসেবে দেখছে, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
উল্লেখ্য, এটাই প্রথম নয়—গত বছর আগস্টেও একই মসজিদে বর্ণবাদী আচরণ, ডিম নিক্ষেপ ও গালাগালির ঘটনা ঘটেছিল। তখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এর আগে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টারে এক ইহুদি উপাসনালয়ের বাইরেও হামলার ঘটনায় দুইজন নিহত হন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ের এসব ঘটনা যুক্তরাজ্যে ধর্মীয় বিদ্বেষ এবং ঘৃণাজনিত অপরাধ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে।