নোবেল শান্তি পুরস্কার ট্রাম্পকে উৎসর্গ করলেন মাচাদো

চলতি বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রকামী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। গতকাল শুক্রবার পুরস্কার বিজয়ী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করে নোবেল কর্তৃপক্ষ। বছরখানেক ধরে আত্মগোপনে থাকা এই নেত্রী নিজের নোবেল শান্তি পুরস্কার উৎসর্গ করেছেন ভেনেজুয়েলার জনগণ এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
নোবেল কমিটি জানায়, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টা এবং স্বৈরশাসন থেকে গণতন্ত্রে ন্যায়সংগত ও শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে মাচাদোকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কার উৎসর্গ করে মাচাদো বলেন, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনে ‘গুরুত্বপূর্ণ ও দৃঢ় সমর্থন’ দিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে মাচাদো লিখেছেন, ‘আমি এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি ভেনেজুয়েলার ভুক্তভোগী জনগণকে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে, আমাদের আন্দোলনে তাঁর দৃঢ় সমর্থনের জন্য!’
মাচাদো আরও বলেন, ‘আমরা এখন বিজয়ের দোরগোড়ায়। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অর্জনের প্রধান সহযোগী হিসেবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, মার্কিন জনগণ, লাতিন আমেরিকার দেশগুলো এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক জাতিগুলোর ওপর এখন আমরা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি নির্ভর করতে পারছি।’
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক্সে নিজের অ্যাকাউন্টে মাচাদোর পোস্টটি শেয়ার করেছেন।
এদিকে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পর ট্রাম্প প্রশাসন মাচাদোর পুরস্কার প্রাপ্তিতে নোবেল কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করলেও ট্রাম্প এ বিষয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। পরে মাচাদোর সঙ্গে ফোনালাপের কথা জানান ট্রাম্প।
ট্রাম্প বলেন, ‘যিনি আসলে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তিনি আমাকে ফোন করে বললেন, “আমি এ পুরস্কারটি আপনার সম্মানে গ্রহণ করছি, কারণ আসলে আপনিই এটি পাওয়ার যোগ্য।”’
ট্রাম্প মজার ছলে যোগ করেন, ‘এটা খুবই সুন্দর একটা ব্যাপার। আমি কিন্তু বলিনি, “তাহলে আমাকেই দাও”, যদিও আমার মনে হয়, উনি হয়তো দিতেও পারতেন। উনি খুবই ভালো।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি ওঁকে অনেকভাবে সাহায্য করে আসছি। ভেনেজুয়েলায় এখন ভয়াবহ পরিস্থিতি, সম্পূর্ণ বিপর্যয় বলা যায়। তাই আপনি এটাও বলতে পারেন, পুরস্কারটি ২০২৪ সালের জন্য দেওয়া হয়েছে। আর আমি ২০২৪ সালে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলাম।’
এক বছর ধরে মাচাদো ভেনেজুয়েলায় আত্মগোপনে আছেন। নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারায় মাচাদো সাবেক কূটনীতিক এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়ার পক্ষে প্রচার চালিয়েছিলেন। উরুতিয়াকে আন্তর্জাতিক মহলের বড় অংশ ভেনেজুয়েলার বৈধ বিজয়ী হিসেবে দেখে। আর অভিযোগ আছে কর্তৃত্ববাদী বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো গত নির্বাচনে কারচুপি করে ক্ষমতা ধরে রেখেছেন।
৫৮ বছর বয়সী মাচাদো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মাদুরোর ওপর চলমান সামরিক চাপের অভিযানকে সমর্থন করেছেন।